বাটা কোম্পানির ইতিহাস
বাটা কোম্পানি হলো একটি বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যার প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের লুসানে অবস্থিত। এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন টোমাস বাটা, যিনি চেক প্রজাতন্ত্রের য্লিন শহরে ১৮৯৪ সালে একটি জুতা কারখানা চালু করেন। টোমাস বাটার পরিবার মুচির পেশায় নিয়োজিত ছিলো এবং তিনি জুতা তৈরির ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার ব্যবসার প্রসার করেন। বাটা কোম্পানি প্রথম পাইকারি হারে জুতা উৎপাদন করে এবং তার কর্মীদের জন্য বাসস্থান, সিনেমাহল, এবং অন্যান্য সুবিধা সরবরাহ করে। টোমাস বাটাকে এই কারণে "পূর্ব ইউরোপের হেনরি ফোর্ড" বলে অভিহিত করা হয়।
১৯৩২ সালে টোমাস বাটা একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান এবং তার সৎভাই জ্যান আন্টোনিন বাটা কোম্পানির নেতৃত্ব নেন। জ্যান বাটা তার ব্যবসার আকার বিশ্বজুড়ে বৃদ্ধি করেন এবং ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়া, এবং আফ্রিকা মহাদেশে বাটার জুতা জনপ্রিয় হয়। জুতা উৎপাদন ছাড়াও বাটা টায়ার, খেলনা, ও প্লাস্টিকের তন্তুও উৎপাদন শুরু করে। ১৯৩০ এর দশকে বাটা কোম্পানির মোট কর্মীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১০৫,৭৭০ জন।
১৯৪০ এর দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে বাটা কোম্পানির ব্যবসা বিচ্ছিন্ন হয়। চেকোস্লোভাকিয়া নাজি জার্মানির অধীনে পড়ে এবং বাটা কোম্পানির সম্পত্তি জার্মান সরকারের হাতে চলে যায়। জ্যান বাটা এবং তার পরিবার কানাডায় পালিয়ে যায় এবং তার কারখানা ও শাখা বিভিন্ন দেশে চালু করে। বাটা কোম্পানি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে জুতা উৎপাদন ও বিক্রি করে এবং তার ব্র্যান্ড নাম গড়ে তোলে।
১৯৬২ সালে জ্যান বাটা মারা যায় এবং তার পুত্র টমাস জর্জ বাটা কোম্পানির নেতৃত্ব নেন। টমাস জর্জ বাটা বাটা কোম্পানির ব্যবসা আরো বৃদ্ধি করেন এবং বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে বাটার শাখা ও কারখানা চালু করেন।
বাটা কোম্পানি পুরুষ, মহিলা, ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের জুতা তৈরি করে। বাটা কোম্পানির জুতাগুলো মানসম্মত, আরামদায়ক, ও স্টাইলিশ। বাটা কোম্পানি জুতার পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য ও সেবা দেয়, যেমন জুতার সামগ্রী, জুতার মেরামত, জুতার ব্যাগ, জুতার এক্সেসরিজ, ইত্যাদি। বাটা কোম্পানি তার গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন অফার, ছাড়, ও পুরস্কার দেয়। বাটা কোম্পানি তার কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ ও সুবিধা সরবরাহ করে।
বাটা কোম্পানি বাংলাদেশে ১৯৬২ সালে প্রবেশ করে। বাংলাদেশে বাটা কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকার টঙ্গীতে অবস্থিত। বাংলাদেশে বাটা কোম্পানির আটটি কারখানা ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাটা শোরুম রয়েছে। বাংলাদেশে বাটা কোম্পানির প্রায় ৩০০টি শাখা ও ৪০০টি ডিলার রয়েছে। বাংলাদেশে বাটা কোম্পানি প্রায় ৫০০০ জন কর্মী নিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে বাটা কোম্পানি বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশগত কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে।
বাটা কোম্পানি একটি বিশ্বব্যাপী জুতা ব্র্যান্ড, যা আমাদের পায়ের সঙ্গী। বাটা কোম্পানি আমাদের জীবনের বিভিন্ন অবস্থায় আমাদের সাথে থাকে। বাটা কোম্পানি আমাদের জুতা দিয়ে আমাদের জীবনকে সুন্দর ও সুখী করে।
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
.jpeg)
Comments
Post a Comment